সংবাদ অনুক্ষণ ডেস্ক, বহরমপুর : পাঁচ বারের সাংসদ অধীর চৌধুরী। এই কঠিন প্রতিপক্ষের গড়ে ‘খেলা হবে’ বলে গত বৃহস্পতিবার থেকেই ভোট প্রচার শুরু করে দিলেন বহরমপুরের তৃণমূল প্রার্থী ইউসুফ পাঠান। কংগ্রেস আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রার্থিতালিকা ঘোষণা না করলেও অধীর জানিয়ে দিয়েছেন, তিনিই বহরমপুর থেকে দলের প্রার্থী হচ্ছেন। ভোট আগামী ১৩ মে, চতুর্থ দফায়। তৃণমূল ইউসুফ পাঠানকে প্রার্থী করায় জেলায় দলের অন্দরে ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করেছিলেন বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে তা মিটেওছে। ইউসুফও নিজের মতামত দিলেন হুমায়ুনকে নিয়ে।
প্রশ্ন: সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়া মানে ব্রেট লি-র বিরুদ্ধে খেলতে নামা। ব্রেট লি-র ফাস্ট বল নাকি আপনার বরাবরের দুর্বল জায়গা! এই ‘দুর্বলতা’ নিয়ে কিছু ভাবলেন?
ইউসুফ: বাঙালিরা বড্ড বুদ্ধিমান (একগাল হেসে বললেন)। আপনি চাইলেও আমার জন্য ঘাসের পিচ তৈরি করতে পারবেন না। ব্রেট লি-র জন্য হেলমেট তৈরি। হুক শট, পুল শট তো আছেই!
প্রশ্ন: কথা বলবেন অধীর চৌধুরীর সঙ্গে?
ইউসুফ: কেন নয়? সুযোগ হলে নিশ্চয়ই বলব। রাজনীতিতে আলাদা দল করলে কি কথা বলা বন্ধ রাখতে হয়?
প্রশ্ন: প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব কে প্রথম দিয়েছিলেন?
ইউসুফ: বিষয়টি অনেকটা হঠাৎ করে হয়ে যাওয়ার মতো। ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর থেকে ওঁর সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেছি। কলকাতায় খেলতে এসে ওঁর প্রতি মানুষের আবেগ দেখেছি। এখানকার ক্রীড়ামন্ত্রীর সঙ্গে খেলার সূত্রে যোগাযোগ ছিল। বাকিটা ব্যক্তিগত…।
প্রশ্ন: বহরমপুরে প্রথম বার এসে কেমন লাগল?
ইউসুফ: খেলার মাঠে যখন পারফর্ম করেছি, তখনও দর্শকদের উন্মাদনা দেখেছি। কিন্তু গ্যালারি থেকে। জনতার মধ্যে থেকে আবেগ ছুঁয়ে দেখার সুযোগ এই প্রথম হল। আশা করি, আবেগের মর্যাদা রাখতে পারব।
প্রশ্ন: বহরমপুরে এসে প্রথম কার সঙ্গে কথা হল?
ইউসুফ: স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে। অপূর্বজি, হুমায়ুনজি, আরও অনেকেই ছিলেন। মূলত যাঁরা মুর্শিদাবাদে নিজেদের ঘাম, রক্ত দিয়ে দলটা করেছেন, তাঁদের সঙ্গেই কথা হয়েছে।
প্রশ্ন: বহরমপুরে আপনাকে প্রথম অভ্যর্থনা জানালেন আপনার দলের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। উনি কিন্তু শুরুতে আপনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। আজ কী কথা হল?
ইউসুফ: সত্যি বলছেন? কিন্তু উনি যে ভাবে গোটা বিষয়টা দেখভাল করলেন, তাতে মনে হল, উনি নিজেই প্রার্থী। ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝি হলে সে সব বড়রা দেখে নেবেন।
প্রশ্ন: আপনি তো বাংলা জানেন না। ভোটারদের বোঝাবেন কী করে? বাংলা শিখবেন?
ইউসুফ: মানুষের মনের ভাব বোঝানোর জন্য ভাষা কখনওই বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। এই তো এত ক্ষণ কথা বললাম। কাউকে দেখে মনে হল, তাঁরা আমার কথা বুঝতে পারেননি?
প্রশ্ন: কী মনে হচ্ছে, ফলাফল কী হবে?
ইউসুফ: গোটা বাংলায় মমতা দিদির জয়জয়কার। সেখানে প্রার্থী কে, আমি না অন্য কেউ, সেটা বড় কথা নয়। আর মানুষের যে ভাবে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস দেখলাম, জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা।
প্রশ্ন: প্রার্থী হওয়ার পর বাবা কী বললেন?
ইউসুফ: দুঃস্থ মানুষের সেবা করা মানুষের পরম কর্তব্য। ছোট থেকে এটাই শিখিয়েছেন বাবা। মানুষের সেবা করার যখন সুযোগ পেয়েছি, বাবা অখুশি কেন হবেন?
প্রশ্ন: ভাইকে রাজনীতিতে আসার কথা বলবেন?
ইউসুফ: এ সব বিষয়ে ভাই আমার থেকেও এক্সপার্ট। তাই আমার পরামর্শের কোনও প্রয়োজন নেই ওঁর।
প্রশ্ন: গৌতম গম্ভীর (নাইট রাইডার্সে সতীর্থ, বিদায়ী বিজেপি সাংসদ)-এর সঙ্গে কথা হয়েছে ?
ইউসুফ: প্লিজ, রাজনীতির সঙ্গে খেলা গুলিয়ে ফেলবেন না। উনি কেকেআরের মেন্টর। মাঠে নিশ্চয়ই কথা হবে।