গত ২১ মার্চ আবগারি মামলায় কেজরীকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। ২৬ জুন সিবিআইও তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল। তবে হেমন্ত সোরেনের মতো গ্রেফতারির আগে কেজরী মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেননি।
সংবাদ অনুক্ষণ অনলাইন ডেস্ক : ছ’মাস পর জামিনে মুক্তি পেলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। শুক্রবার বিকেলে দিল্লিতে তখন মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। তিহাড় জেল থেকে বেরিয়ে হাজার হাজার সমর্থকদের দিকে হাত নেড়ে কেজরী জানালেন, ওই গারদ তাঁকে দুর্বল করতে পারেনি। বরং এই ক’টা দিন তাঁকে আরও সাহসী করে দিল।বিকেলে জেল থেকে বেরিয়ে কেজরী বলেন, ‘‘প্রথমেই আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তাঁর আশীর্বাদে আমি এখানে দাঁড়িয়ে আছি। তার পর আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি, হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ মানুষকে, যাঁরা এমন প্রচণ্ড বৃষ্টি উপেক্ষা করে এখানে এসেছেন।’’ বস্তুত, আপ প্রধানের জামিন মঞ্জুর হওয়ার খবর পাওয়ার পরেই তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে। তিহাড় জেল থেকে কেজরী ছাড়া পেতেই তাঁকে দেখতে ভিড় করেন প্রচুর মানুষ। জেল থেকে বেরিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমার প্রত্যেক রক্তবিন্দু এই দেশের জন্য উৎসর্গ করেছি। অনেক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু সর্বদা ঈশ্বরের কৃপা পেয়েছি। ওরা আমায় জেলে বন্দি রেখেছে ঠিকই। কিন্তু তাতে আমার মনোবল ভাঙেনি, আরও শক্তিশালী হয়েছে। জেলের গরাদ আমাকে দুর্বল করতে পারেনি।’’ কেজরীর সংযোজন, ‘‘আজ (শুক্রবার) আপনাদের বলতে চাই যে, জেল থেকে বেরিয়ে এসে আমার মনোবল ১০০ গুণ বেড়ে গিয়েছি। আমার শক্তি ১০০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।’’গত ২১ মার্চ আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরীকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। ২৬ জুন সিবিআই তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেয়। তবে হেমন্ত সোরেনের মতো গ্রেফতারির আগে কেজরী মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেননি। বস্তুত, তিনিই দেশের প্রথম কোনও মুখ্যমন্ত্রী, যিনি পদে থাকাকালীন গ্রেফতার হয়েছেন। গত লোকসভা ভোটের সময়ে দলের হয়ে প্রচারের জন্য আপ নেতাকে শীর্ষ আদালত কয়েক দিনের জন্য প্যারোলে মুক্তি দিয়েছিল। পরে আবারও কেজরীর ঠিকানা হয় তিহাড় জেল। জামিনে মুক্তির পরে কেজরী জানিয়েছেন, ‘জাতীয়তা বিরোধী শক্তি’র বিরুদ্ধে তাঁর যুদ্ধ জারি থাকবে।বস্তুত, আবগারি মামলায় সিবিআইয়ের গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানিয়েছিলেন আপ প্রধান। জামিন চেয়ে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। পরে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। গত ৫ সেপ্টেম্বর শুনানিতে বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার বেঞ্চে রায়দান স্থগিত রেখেছিল। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বেশ কয়েকটি শর্তে কেজরীর জামিন মঞ্জুর করেছে। যেমন— জেল থেকে বেরোনোর পর লেফ্টেন্যান্ট গভর্নরের অনুমোদন ব্যতীত কেজরী কোনও সরকারি ফাইলে সই করতে পারবেন না। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেও যেতে পারবেন না। প্রকাশ্যে সংশ্লিষ্ট মামলা সংক্রান্ত মন্তব্য করতে পারবেন না।