সোমবার সন্ধ্যায় বৌবাজার থানার সামনে চলে যান জুনিয়র চিকিৎসকেরা। স্লোগানে স্লোগানে ভরে ওঠে থানা চত্বর। কিছু ক্ষণ ওই ভাবে বিক্ষোভ চলার পর থানার সামনে বসে পড়েন জুনিয়র ডাক্তারেরা।
সংবাদ অনুক্ষণ অনলাইন সংবাদদাতা : প্রায় তিন ঘণ্টা বৌবাজার থানায় বিক্ষোভ, পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটির পরে ‘বাজেয়াপ্ত’ করা চৌকি ‘ছাড়িয়ে’ আনলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ছেড়ে দেওয়া হয় সাইকেল ভ্যানগুলিও। সেগুলোয় কয়েকটি চাপানো হয়। কয়েকটি চৌকি নিজেরাই কাঁধে তুলে নেন ডাক্তারেরা। তার পর হাঁটা দেন অনশনমঞ্চের দিকে। সঙ্গে পুলিশের উপর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। আন্দোলনকারীদের কথায়, ‘‘এটা প্রতীকী প্রতিবাদ। সাইকেল রিকশা ছেড়েছে পুলিশ।আটটি চৌকি-ও পেয়েছি। কিন্তু পুলিশের কাজের বিরোধিতায় কাঁধে করে চৌকি বয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’’
ধর্মতলায় অনশনের তৃতীয় দিনে অশান্তি শুরু হয়। বৌবাজার থানার সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা। অভিযোগ, অনশনমঞ্চে বসবার জন্য যে চৌকি আনা হয়েছিল, সেগুলো ‘বাজেয়াপ্ত’ করেছে পুলিশ। রাস্তাতেই ওই নিয়ে একপ্রস্ত বাদানুবাদ হয় পুলিশ এবং জুনিয়র ডাক্তারদের। তার পর সোমবার সন্ধ্যায় উত্তেজনা ছড়াল বৌবাজার থানার সামনে। জুনিয়র ডাক্তারদের স্লোগানে স্লোগানে ভরে ওঠে থানা চত্বর। পরে থানার মূল গেটের সামনে বসে পড়েন তাঁরা।
আর জি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে ১০ দফা দাবি আদায়ের জন্য ধর্মতলা চত্বরে ধর্নায় বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। শনিবার রাত থেকে চলছে আমরণ অনশন। এর আগে পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। বায়ো টয়লেট বসানো নিয়ে অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। এ বার চৌকি নিয়ে শুরু হয় অভিযোগ। ডাক্তারেরা জানাচ্ছেন, অনশনমঞ্চের জন্য কয়েকটি চৌকি আনিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু পুলিশ চৌকিবোঝাই সাইকেল ভ্যান আটকে দেয়। মঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছয়নি চৌকি। এ ছাড়াও কয়েকটি প্লাস্টিকের চেয়ার আনানো হয়েছিল। সেগুলিও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছিল বলে অভিযোগ।
অন্য দিকে, পুলিশ জানায় যে রাস্তা দিয়ে চৌকি আনা হচ্ছিল, সেখানে রিকশা চালানোর অনুমতি নেই। ওই নিয়ে দু’পক্ষের কথা কাটাকাটির পর সোজা থানায় গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। আন্দোলনরত এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, ‘‘পুলিশ এই আন্দোলনে নানা ভাবে বাধা দিচ্ছে। বায়ো টয়লেট বসানো থেকে ডেকরেটরদের গাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া, সবেতেই গায়ের জোরে দেখাচ্ছে পুলিশ।’’ তিনি জানান, সকালে নিজেরাই বায়ো টয়লেট তৈরি করেছেন। কিন্তু এ বার চৌকি আনতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। আর এক জুনিয়র ডাক্তার কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘এর থেকে খারাপ জিনিস বোধ হয় কোনও দেশের বা অন্য কোনও রাজ্যের সরকার কোনও দিন করেনি! এরা সেই রাস্তাটাও আজ দেখিয়ে দিল।’’
উল্লেখ্য, সোমবারই সাংবাদিক বৈঠক করে অনশনরত জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। অন্য দিকে, আন্দোলনের সমর্থনে জুনিয়র ডাক্তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টর্স। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ইউটিউবে লাইভ স্ট্রিমিং হবে অনশনের।