ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সুন্দলপুর শান্তি সেবা ক্লাবের পরিচলনায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা। ৪৯ বছরে পদার্পণ এই নৌকা বাইচ ।
সংবাদ অনুক্ষণ অনলাইন : মুর্শিদাবাদের অতি সুপরিচিত দুই থানা ডোমকল ও হরিহরপাড়ার মাঝ দিয়ে গিয়েছে এই ভৈরব নদী আর সেই ভৈরব নদীর ফতেপুর সুন্দলপুর ফেরিঘাটে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান হলো বিরাট নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা। মূলত, এলাকার মানুষের উদ্যোগে এবং প্রশাসনিক সহযোগিতায় এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা হয়ে আসছে দীর্ঘ ৪৮ বছর ধরে । নৌকা বাইচে উৎসাহী মানুষজন প্রতিযোগিতায় দেখার জন্য নদীর দুই ধারে ভিড় জমান।
বাইচ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী নৌকাগুলি ছিল নানা রংয়ে সুসজ্জিত। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী এক একটি নৌকায় ২৪ জন করে প্রতিযোগী ছিলেন। এবার এর প্রতিযোগিতায় পাঁচ টি দল অংশ গ্রহণ করেন। এদিন নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা শেষে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানাধিকারী দলগুলির হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। তার সঙ্গে ছিল ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা।
স্থানীয় মানুষজনের কথায়, একসময় দূরে যাতায়াতে যোগাযোগের ভরসা ছিল নৌকা। শুধু তাই নয় কৃষকদের উৎপাদিত ফসল পরিবহনে এবং ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন মালপত্র শহর থেকে আনার ক্ষেত্রেও নদীপথই ছিল ভরসা।বর্তমানে সড়কপথের অনেকটা উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থায় স্থান করে নিয়েছে বিভিন্ন যানবাহন। স্বাভাবিকভাবেই ধীরে ধীরে এখন নৌকার প্রচলন কমছে। কমছে নৌকা চালানোর মাঝির সংখ্যাও। তবে এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে নৌকার ব্যবহারের ঐতিহ্য ধরে রাখার উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।
কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা প্রথম শুরু হয়েছিল ১৯৭৫ সালে। ৪৯ বছর ধরে এখনও চলছে। নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে হারিয়ে যেতে বসা ঐতিহ্যকে আমরা ধরে রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
প্রতিযোগীদের অনেকের মতে এমন উদ্যোগে তাঁরা খুশি। কিন্তু বর্তমানে মাঝারি মাপের একটি নৌকা বানাতে খরচ কয়েক লক্ষ টাকার কাছাকাছি। একটু বড় মাপের হলেই সেই খরচের পরিমাণ আরো বেশি একটি নৌকা তৈরিতে। তাই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে অনেকের আগ্রহ থাকলেও আর্থিক কারণে নৌকার অভাবে সম্ভব হয় না। সেই কারণে অন্যান্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মতো নৌকা বাইচ প্রতিযোগিদের জন্য সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা করলে আগ্রহীরা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।